September 27, 2025, 11:48 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে কোটি টাকার বেশি জমা থাকা হিসাবের সংখ্যা নতুন রেকর্ড করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চে এই ধরনের হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৩৬২টি, যা জুনে বেড়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টিতে পৌঁছেছে। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৯৭৪টি কোটিপতি হিসাব।
তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই সব সময় কোনো ব্যক্তি কোটিপতি নয়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যাংকে রাখতে পারে। এছাড়া একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলতে পারেন, ফলে একই নামে একাধিক কোটিপতি হিসাব থাকতে পারে। কোটিপতি হিসাব বৃদ্ধির এই প্রবণতা নতুন নয়।
একই সময়ে ব্যাংকে মোট আমানতও বেড়েছে। মার্চে সব হিসাব মিলিয়ে মোট আমানত ছিল ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা, যা জুনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকায়। তিন মাসে আমানত বেড়েছে প্রায় ৭৩ হাজার ৭৫ কোটি টাকা।
দেশে ব্যাংক হিসাবের মোট সংখ্যাও বেড়েছে ১৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮২১টি থেকে ১৬ কোটি ৯০ লাখ ২ হাজার ৬৭১টিতে, অর্থাৎ নতুনভাবে প্রায় ৩২ লাখ ৯৫ হাজার হিসাব খোলা হয়েছে। বিশেষভাবে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, কোটি টাকার বেশি হিসাবগুলোতে জমা ত্বরান্বিত হারে বেড়েছে। মার্চে এসব হিসাবের মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা, যা জুনে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার ৭৭২ কোটি টাকায়। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে কোটিপতি হিসাবের জমা বেড়েছে প্রায় ৯৭ হাজার ১১৯ কোটি টাকা।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে মাত্র ৫টি কোটি টাকার হিসাব ছিল। ১৯৭৫ সালে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭টিতে, ১৯৮০ সালে ৯৮টিতে। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই বাড়তে থাকে। ১৯৯০ সালে ছিল ৯৪৩টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০২০ সালের শেষে কোটিপতি হিসাব দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে, ২০২১ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬টি, ২০২২ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি, ২০২৩ সালে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি, ২০২৪ সালের শেষে ১ লাখ ২১ হাজার ৮১টি এবং ২০২৫ সালের জুনে ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৬টিতে পৌঁছেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ব্যাংক খাতে কোটিপতি হিসাবের বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এটি ব্যবসা-বাণিজ্যে টাকার প্রবাহ বৃদ্ধি এবং জনগণের আমানত রাখার সক্ষমতার বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে।